সুমেধা পূর্ব জন্ম
সুমেধা পূর্ব জন্ম
সুমেধার পূর্ব জন্ম বড়
বৈচিত্রময় ও সমুজ্জ্বল। তিনি পূর্ব বুদ্ধ
গণের সাক্ষাৎ লাভ করে ছিলেন এবং বুদ্ধ শাসনে বিবিধ প্রকার কুশল কর্ম সম্পাদন করে
নিজকে পূর্ণ সুষমায় মন্ডিত করে ছিলেন।
এতেই সুগম হয়ে ছিল তাঁর মুক্তির পথ।
তাঁর বড় সৌভাগ্য যে, পরম পুণ্য ক্ষেত্র কোণাগমন বুদ্ধের সময় তিনি জন্ম
নিয়ে ছিলেন এক সম্রান্ত বংশে।জন্মান্তরে
উপচিত কুশল সংস্কারের প্রভাবে রত্ন লয়ের প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা স্বতঃই বিকাশ লাভ করে
তাঁর পুণ্য পূত অন্তরে। বুদ্ধ ও ভিক্ষু
সংঘের প্রতি তাঁর অপরিসীম মমতা। প্রতি দিন বিহারে গিয়ে বুদ্ধ প্রমুখ। ভিক্ষু সংঘের দর্শন ও ধর্ম শ্রবণ তাঁর জীবনের
অন্যতম ব্রত। দানে তাঁর অপার আনন্দ,
অধিকন্তু শীল পালনে শুচি শুভ্র জীবন গঠনের প্রতি তাঁর প্রবল আগ্রহ।
সুমেধা পূর্ব জন্ম |
এক দিন তিনি ধর্ম সভায় হৃদয় গ্রাহী ভাষণ শুনলেন। শুনলেন বিহার দানের উপকারিতা, প্রয়োজনীয়তা এবং বৈশিষ্ট্য পূর্ণ সুখ দায়ক ফল লাভের কথা। তাঁর অন্তর উদ্বুদ্ধ হল এবং বিহার দানের প্রবল ইচ্ছা জাগ্রত হল। তাঁর দুই জন সখী সহচরী ধনাঢ্য কুলের রমণী ক্ষেমা ও ধনঞ্জনী। তাঁদের নিকট তাঁর অন্তরের কথা ব্যক্ত করলেন। তাঁর কথা সখী দ্বয় উৎফুল্ল অন্তরে অনুমোদন করলেন। রমণী ত্রয়ের মানস কুসুম একই সূত্রে গ্রথিত হল। একই মনো ভাব, একই বাসনাময় পুণ্য পূত তিন মনের সংমিশ্রণে মহা শক্তির উদ্ভব হল। শ্ৰদ্ধাবতী নারীত্রয় এক যোগে সর্বাঙ্গ পরি পূর্ণ মনোরম প্রকান্ড এক বিহার তৈরী করালেন। বিহার দানের অনুষ্ঠান অতি আড়ম্বর পূর্ণ হল। বুদ্ধ প্রমুখ আগত অনাগত ভিক্ষু সংঘকে এ মহাবিহার দান করলেন।
কুলকন্যা ভাবী সুমেধা বিহার
দানকে কেন্দ্র করে পূর্ব চেতনা, মুঞ্চন চেতনা ও অপর চেতনায় মহা পুণ্য অর্জন করে
ছিলেন। তজ্জন্য তাঁর আনন্দ ও সৌমন স্যভাব
বর্ণনাতীত। এ উপায়ে তাঁর ভাবী জীবনকে এমন
সমুজ্জ্বল ও আনন্দময় করে তুলে ছিলেন যে, যা অনির্বচনীয় ও অচিন্ত্যনীয়। এ পুণ্য শ্নোকা নারীর মহা কুশল কর্ম চিত্ত
সম্পদ, ক্ষেত্র সম্পদ ও বস্তু সম্পদে এতই মহান ও প্রভাব শালী হয়ে ছিল যে, এতেই
তিনি পরমায়ুর অবসানে দেহ ত্যাগের পর ‘তাবতিংস’ দেবলোকে দেবেন্দ্র পুরে উৎপন্ন হয়ে
ছিলেন। তাঁর দিব্য কান্তি, দিব্য রূপ ও দিব্য জ্যোতিতে দেব রাজের দিব্য বিমান
উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছিল এবং তত্রস্থ দেব বালাদের অভি ভব করে তিনি বিরোচিত হয়ে ছিলেন।
দেব রাজ ইন্দ্র নবাবির্ভূতা
জ্যোতির্ময়ী দেব কন্যাকে দর্শন করেই বিস্ময়ে অভি ভূত হয়ে পড়লেন। তিনি জিজ্ঞাসা
করলেন বিস্ময় কণ্ঠে “অনুমো দর্শনে দেবতে, তুমি কোথা হতে এসে আমার ভবন অপ রূপ
জ্যোতিতে আলোচিত করে বিরোচিত হচ্ছে? আমার এ বিমান সুরুচি পূর্ণ জ্যোতি রত্নময়। এমন মনোরম দিব্যা বিমান প্রাদুর্ভূত হয়েছে এক
মাত্র আমারই পুণ্য প্রভাবে। দিব্য
ঐশ্বর্যে দীপ্যমান এ বৈচিত্র্যময় বিমানে শত সহস্র জ্যোতিস্মতী পুণ্যময়ী দেব বালা
উৎপন্ন হয়ে আমার মনো রঞ্জন করছে। কিন্তু দেবী, তুমি এসব দেব কন্যা দেরও অভিভব করে
শোভা পাচ্ছ! চন্দ্ৰমাঃ যেমন তাঁর কারাভি পরাজয় করে বিরোচিত হয়, সে রূপ তুমিও এ অভি
রূপা অপ্সরাদের পরাভব করে সুশোভিত হচ্ছ! তোমার শোভন মোহন জ্যোতিষ্মান রূপের নিকট
অপুর দেবা লাদের রূপ তিরস্কৃত হচ্ছে! মহা ব্রহ্মাকে দেখে তাবতিংসের দেবগণ যে রূপ
আনন্দিত হয়, সে রূপ তোমাকে দেখেও সমস্ত দেবতা আনন্দানুভব করছে। অয়ি প্রিয় দর্শনা দেবী, তোমায় জিজ্ঞাসা করছি,
কোন কুশল কর্ম সম্পাদন করে এরূপ যশস্বিনী হয়েছ?”
প্রশ্নোত্তরে দেব কন্যা মধুর
কণ্ঠে বললেন “দেব রাজ, আমি গত জন্মে ভগবান কোণাগমন বুদ্ধের উপাসিকা ছিলাম। এক সময়
বিহার দানের বৈচিত্র্যময় ফলের কথা শুনে একখানা বিহার দানের তীব্র ইচছা জাগ্রত হয়। অচিরে সে সুযোগ আমার জুটে গেল। আমার দুই
জন প্রিয় সখী ধনাঢ্য কুলের উদারচেতাঃ মহিলা এ শুভ কাজে যোগদান করে ছিল। যথা সময় একখানা সুদৃশ্য বড় বিহার নির্মাণ করে
বুদ্ধ প্রমুখ ভিক্ষু সংঘকে দান করে ছিলাম এবং এতে আমি অনুপম আনন্দ উপভোগ করে
ছিলাম। দানের পূর্বে, দানের সময় ও দানের
পর চিত্তের সুপ্রসন্ন ভাব বিরাজ মান ছিল আমার অন্তিম নিশ্বাস। পর্যন্ত চিত্ত সম্পদ, বস্তু সম্পদ ও ক্ষেত্র
সম্পদের দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠতম ও সুবি শুদ্ধ হেতু পুণ্য উৎপন্ন হয়েছে বিপুল
অপ্রমাণ। এ বিরাট পুণ্যের ফলেই আজ আমি দেব
রাজ পুরি ভোগ ঈদৃশ সুরম্য রত্ন বিমানের অধিবাসিনী হয়েছি। আরো শুনুন, মানব কুলে আমি প্রতি দিন বিহারে
গিয়ে প্রসন্ন মনে বুদ্ধ প্রমুখ ভিক্ষু সঙ্ঘের দর্শন ও পূজা করতাম এবং বিবিধ খাদ্য
ভোজ্য দান করতাম। সারা জীবন পঞ্চশীল, উপোসথ দিবসে অষ্টাঙ্গ উপোসথ শীল প্রতি পালন
করে ছিলাম।
এ মহান পুণ্য প্রভাবে স্বতঃই
আমার দেহ হতে এরূপ মনোরম দিব্য জ্যোতিঃ নিঃসৃত হচ্ছে। আমি এখন সম্যক রূপে উপলব্ধি করছি; যাঁরা
তাবতিংস দেব তাদের সঙ্গ লাভ কর বার ইচ্ছা করেন, তাঁদের বহু বিধ কুশল কর্ম সম্পাদন
করা প্রয়োজন। পুণ্য বানই সর্ব বিধ দিব্য
সম্পদের অধিকারী হন। যারা পুণ্যার্জন করে
না, তাদের জন্য এ দিব্য স্থান নয়। পুণ্য
বানের জন্যই এই ত্রিদশালয়ের শোক দুঃখ হীন রমণীর দিব্য ভবন ও দিব্যৈশ্বর্য। যারা কুশল কর্ম সম্পাদন করে না, তাদের সুখ
শান্তি ইহলোকেও নেই, পরলোকেও নেই। পুণ্য
বানেরাই ইহ পর কালে সুখী হন।” দেব রাজ ইন্দ্র দেব বালার এরূপ বাক্যাবলী শ্রবণে
সন্তুষ্ট হয়ে বললেন “অচিন্ত্যনীয় বুদ্ধ, নির্বাণ প্রদ ধর্ম ও অনুত্তর পুণ্য
ক্ষেত্র সংঘ, এ রত্ন ত্রয়ের প্রতি প্রসন্নমনা, প্রগাঢ় শ্রদ্ধা ও বিশুদ্ধ শীল
সম্পন্না, অনাময়ী ও প্রিয় দর্শনা দেবতে, তুমি ধর্ম যশে ও দিব্য যশে যশ স্বিনী হয়ে
বিরোচিত হচ্ছে। তোমার দ্বিবিধ সম্পদই আমি
অনুমোদন করছি। এ দেবলোকে তুমি স্বাগতা।” এ বলে দেব রাজ এ পুণ্য শ্লোকা মহীয়সী দেব
কন্যাকে তাঁর প্রধানা মহিষী পদে বরণ করে পুণ্যের পুরস্কার স্বরূপ মহা গৌরব দান
করলেন।
এ সৌভাগ্যবতী দেব কন্যা দেব
রাজ্যের প্রিয় তমা পত্নী হয়ে অচিন্ত্য নীয় দিব্যৈশ্বর্যের অধিকারিণী হয়ে ছিলেন। এ
আনন্দময় সুর পুরে তিনি দেব বালাদের শ্রেষ্ঠ হয়ে পরম সুখে তিন কোটি, ষাট লক্ষ বৎসর
অনুপম দিব্য সম্পদ ভোগগ করে ‘তাবতিংস’ স্বর্গ হতে চ্যুত হয়ে ‘যাম’ দেব লোকে উৎপন্ন
হয়ে ছিলেন। তথায় ‘সুকাম’ নামক দেব রাজের
প্রধান মহিষী হয়ে ১৪ কোটি ৪০ লক্ষ বৎসর তাবতিংস স্বর্গ হতেও অধিকতর দিব্য সুখ ভোগ
করে ছিলেন। ‘যাম’ দেব লোকে সুদীর্ঘ আয়ুর
অব সানে সেখান হতে চ্যুত হয়ে। মনোরম
সৌন্দর্য শ্রেষ্ঠ ‘তুষিত’ স্বর্গে উৎপন্ন হয়ে ছিলেন। তথায় ‘সন্তে ষিত’ নামক দেব রাজের প্রধানা মহিষী
হয়ে ৫৭ কোটি ৬০ লক্ষ বৎসর অনুপম দিব্য সম্পদ পরি ভোগ করে ছিলেন।
‘তুষিত’ স্বর্গ হতে পরমায়ুর অব
সানে চ্যুত হয়ে ‘নির্মাণ রতি’ দেব লোকে উৎপন্ন হয়ে ছিলেন। তথায় ‘সুনির্মিত’ নামক দেব রাজের প্রধানা মহিষী
হয়ে ২৩০ কোটি ৪০ লক্ষ বৎসর অতুলনীয় দিব্য সুখ উপভোগ করে ছিলেন। ‘নির্মাণ'রতি’ দেব
লোক হতে পরমায়ুর অবসানে চ্যুত হয়ে।
‘পরনির্মিত বশবর্তী দেব লোকে উৎপন্ন হয়ে ছিলেন। তথায় ‘বশবর্তী নামক দেব রাজের প্রধানা মহিষী হয়ে
৯২১ কোটি, ৬০ লক্ষ বৎসর কাম লোকের অদ্বিতীয় দিব সুখ পরি ভোগ করে পরমায়ুর অব সানে
সেখান হতে চ্যুত হয়ে মনুষ্য কুলে মহা ধনাঢ্য ব্যক্তির কন্যা হয়ে জন্ম গ্রহণ করে
ছিলেন। তাঁর বয়ো বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রখর জ্ঞান ও বিচার বুদ্ধির পরিচয় দিয়ে
ছিলেন। তাঁর স্মৃতি শক্তিও প্রবল ছিল।
তখন জগতে আবির্ভূত হয়ে ছিলেন
ভগবান কশ্যপ বুদ্ধ। একদা উক্ত ধন বানের কন্যা তথাগত বুদ্ধের বাণী শুনে রত্ন ত্রয়ের
প্রতি অত্যধিক প্রসন্ন হন। বুদ্ধ ও ভিক্ষুগণকে দান করেন মুক্ত হস্তে, মম তাময় অন্ত
রে।সকল সময় সযত্নে শীল রক্ষা করেন। একাগ্রতার সাথে দেহের ৩২ প্রকার অশুচি সম্বন্ধে
ভাবনা করেন। অনিত্য দুঃখ অনাত্মা এ ত্রিল
ক্ষণ জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য যত্ন পর থাকেন।
এরূপে দান শীল ভাবনাময় বিবিধ কুশল কর্মে নিরত হয়ে পরমায়র অব সানে দেহ
ত্যাগের পর আবার তাবতিংস স্বর্গে উৎপন্ন হন। মানব কুলে সঞ্চিত পুণ্যের পুরস্কার
স্বরূপ পুনঃ পুনঃ সপ্তকাম সুগতি লোকের এক এক ভুবনে জন্ম নিয়ে মহা সুখের অধিকারিণী
হয়ে ছিলেন। তাঁর এ জন্ম গ্রহণের ক্রমিক
পর্যায় বৈশিষ্ট্য পূর্ণ ও আশ্চর্য জনক।
যথা এক বার তিনি মনুষ্য লোকে
জন্ম নিয়ে মৃত্যুর পর উপর্যুপরি দশ বার দে বলোকে উৎপন্ন হয়ে ছিলেন। পরে পুনরায় একর
মনুষ্য লোকে জন্ম নিয়ে পরমায়ুর অব সানে দেহ ত্যাগের পর উপর্যুপরি শত বার বা
শতাধিকার দেব লোকে উৎপন্ন হয়ে ছিলেন।
এরূপে একবার মনুষ্য লোকে আবার শত শত বার বা সহস্র সহস্র বার, কোন কোন সময়
দশ সহস্র বার দেব লোকে জন্ম নিয়ে ছিলেন।
দেব জন্মে তিনি দিব্য ঋদ্ধি, দিব্য যশঃ, দিব্য রূপ, দিব্য জ্যোতি, দিব্য
ঐশ্বর্য ও দিব্যানু ভাবে অন্যান্য দেব তাদের অভিভব করে বিরোচিত হয়ে ছিলেন। মানব কুলে মহা ধনাট্যের কন্যা, রাজ কন্যা, রাজ
মহিষী, রাজ চক্রবর্তীর প্রধানা মহিষী, সপ্তরত্নের অন্য তম রত্ন স্ত্রীরত্ব হয়ে পরম
সৌভাগ্যের অধিকারিণী হয়ে ছিলেন। ইহ পর উভয়
কালই তাঁর পক্ষে আনন্দময় ও মহা সুখময় হয়ে ছিল।
এরূপ সৌভাগ্য লাভ জগতে বড়ই দুর্লভ।বিহার দান মহা পুণ্যের সঙ্গে সংযোগ হয়ে ছিল দান শীল ভাবনার মহা পুণ্য, মণি
কাঞ্চন সংযোগের মত।
এর পর জগতে আবির্ভূত হলেন
শাক্য মুনি বুদ্ধ। এমন সুদুর্লভ শুভ সময়ে
উক্ত পুণ্য দীপ্তি মতী নারী দেব কুল হতে নেমে এলেন মন্তাবতী নগরীর নয়াধিপ কোঞ্চের
কন্যা রূপে। এ রাজ নন্দিনীই সেই সুমেধা। এ পুণ্য প্রভাময়ী নারী যেন অমরা পুরী হতে
দিব্য জ্যোতি দিব্য রূপ স্বাধিকার ভাবেই নিয়ে এসেছেন। রূপ লাবণ্যের এমন উজ্জ্বলতা মানবের মধ্যে সম্ভব
নয়। তাঁর সুন্দর দীপ্ত চোখে প্রতি ভার
জ্যোতি বিকশিত। মুখে স্বয়ং সঞ্জাত শোভন
মোহন প্রসন্নতায় ছাপ যেন লেগেই রয়েছে। জনান্তরের অপরিমেয় পুণ্য সংস্কারের প্রভাবে তাঁর শৈশবেই প্রতীয়মান হয়েছে
সদ্ধর্মের প্রতি প্রাণের প্রগাঢ় আকর্ষণ।
যার প্রভাবে তিনি ভোগ বিলাসের প্রতি বীত শ্রদ্ধা হয়ে ছিলেন এবং বুদ্ধ শাসনে
প্রব্রজ্যা গ্রহণ করে নির্বাণ সাক্ষাৎ করে ছিলেন।
সুমেধার এ নির্বাণ সাক্ষাৎ বড়ই বিস্ময়কর। তিনি জাতি স্মর জ্ঞানের প্রভাবে পূর্ব জন্মের ইতি বৃত্ত জ্ঞাত হয়ে জগতের শিক্ষার জন্য তা প্রকাশ করে ছিলেন “ভগবান কোণাগমন বুদ্ধের সময় আমি ও আমার দুই জন সখী ক্ষেমা ও ধনঞ্জনী এক যোগে এক খানা বৃহৎ সরম্য বিহার নির্মাণ করিয়ে বুদ্ধ প্রমুখ ভিক্ষু সংঘকে দান করে ছিলাম।
এর ফলে দেব মনুষ্য লোকে যেরূপ অসাধারণ ও অচিন্ত্যনীয় সুখের অধিকারিণী হয়ে ছিলাম, এর এক মাত্র হেতু হল বুদ্ধ শাসনে আত্ম সমর্পণ; তাই মূল তাই উৎস। এ আত্ম সমর্পণই প্রথম সংযোগ। এতেই আমি তৃষ্ণাক্ষয় করে সর্বোচ্চ সিদ্ধি লাভ করেছি। অনন্য সাধারণ প্রজ্ঞার অধিকারী ভগবান সম্যক সম্বুদ্ধের বচনে যাঁরা শ্রদ্ধাবান, তাঁরাই তৃষ্ণাক্ষয় করে নির্বাণ সাক্ষাৎ করেন। সুমেধার পূর্ব জন্ম কাহিনী সমাপ্ত।