বুদ্ধের ১২টি কর্ম বিপাক
বুদ্ধের ১২টি কর্ম বিপাক
কর্ম ও কর্ম বিপাকের প্রতি বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা রেখে বৌদ্ধগণ অকুশল বা পাপ কর্ম থেকে বিরত থাকেন এবং কুশল বা পুণ্য কর্ম সম্পাদন করেন। স্বয়ং গৌতম বুদ্ধ যিনি অত্যন্ত প্রজ্ঞাবান ও নির্মল চরিত্রের অধিকারী ছিলেন। যিনি ১০টি পারমী ১০টি উপপারমী ১০টি পরমার্থ পারমী পূরণ সহ চারি অসংখ্য লক্ষ কল্পকাল ধরে বুদ্ধ হবার কামনায় পারমী পূরণ করেছেন তাকে অতীতের পাপের ১২টি বিপাক ভোগ করতে হয়ে ছিল। আমরা যারা বোকার মত খেয়ে দেয়ে রাত দিন অহরহ পাপ কর্মে রত থেকে দিন অতি বাহিত করছি।
আরো দেখুন: মানব জীবন
আরো দেখুন: কর্ম ফল অবিশ্বসী রাজা পায়াসী
![]() |
বুদ্ধের ১২টি কর্ম বিপাক |
আমাদের মধ্যে ধর্ম সংবেগ সৃষ্টির জন্য
তিনি নিজের ১২টি কর্ম বিপাকের কথা শিষ্যদের মধ্যে ব্যক্ত করে ছিলেন। বুদ্ধের ১২টি কর্ম বিপাকের কথা লিখতে গেলে তাঁর
অতীত জন্মের কাহিনী বা জাতকের কথা এসে যায়। কারণ এই ১২টি বিপাক তাঁর বোধিসত্ত্ব অবস্থায়
অতীত জন্মের বৃত্তান্ত। কথিত আছে ভগবান
বুদ্ধ তাঁর শিষ্যদের মধ্যে কাহারো দোষ ত্রু টি গুণ ইত্যাদি দেখিয়া সেই ব্যক্তিকে
উপলক্ষ করিয়া তাঁর অতীত জন্মের কাহিনী বলিতেন। এই রূপে প্রত্যেকটি জন্ম বৃত্তান্তকে বৌদ্ধ
সাহিত্যে জাতক বলে, জাতকের সাহিত্যিক রূপ বিবেচনা করলে আমরা ৫টি অংশ দেখতে পাই।
১ম অংশ প্রত্যুৎপন্ন বস্তু বা
বর্তমান কাহিনী, ২য় অংশ অতীত বস্তু বা অতীত কাহিনী, ৩য় অংশ বুদ্ধের অতীত জন্ম
বৃত্তান্ত বা অভি সমুদ্ধ গাথা, ৪র্থ অংশ গাথার টীকা বা ভাষ্য, ৫ম অংশে সমাধান। এই হিসাবে জাতকের সংখ্যা অনির্দিষ্ট বলা যায় এবং
জাতককে জগতের সর্ব শ্রেষ্ঠ গল্প সংগ্রহ বলা হয়। স্বর্গীয় ঈশান চন্দ্র ঘোষ বলেন, নানা দেশীয় কথা
কোষের মধ্যে জাতক সর্বাপেক্ষা বৃহৎই নয় সর্বাপেক্ষা প্রাচীন, এই জাতক বৌদ্ধ ধর্ম
শাস্ত্রের নবাগের এক অঙ্গ, বুদ্ধ ঘোষ সম্পাদিত জাতকার্য বর্ণনায় মোট ৫৪৭টি জাতকের কথা
বলা হয়েছে।
পালি কিং বদন্তি অনুসারে
৫৫০টি, চুল্লনিদ্দেসে উক্ত হয়েছে ৫০০টি, প্রকৃত পক্ষে জাতক নামের গল্প গুলির কোন
সংখ্যা নাই কেন না জাতকের ক্রমিক সংখ্যা গণনা না করিয়া যদি আখ্যান ভাগ বা উপখ্যান
ধরিয়া গণনা করা হয়। তাহলে জাতকের সংখ্যা ৩
হাজারের উপরে দাঁড়ায় কয়টি জাতক কোথায় বলা হয়ে ছিল এবং অতীত জন্মে বোধিসত্ত্ব কি
কি রূপে জন্ম গ্রহণ করে ছিলেন তার একটি তালিকা নিন্ম রূপ ভাবে দেওয়া যেতে পারে। বলিবার স্থান অনুসারে জেতবনে ৪১০টি, বেণুবনে ৪৯টি, শ্রাবস্তীতে ৩৬টি, রাজগীরে ৫টি,
কৌশম্বিতে ৫টি, কপিলাবস্তুতে ৪টি, বৈশলীতে ৪টি, আলাবিতে ৩টি, কুন্তলাদেহে ৩টি,
কুশীনগরে ২টি, মগধে ২টি, ঋষবনে ১টি, দক্ষিণাগিরিতে ১টি, মৃগদাবে ১টি, মিথিলাতে
১টি, গঙ্গাতীরে ১টি এরূপ গননায় মোট ৫২৮টি জাতক উক্ত হয়ে ছিল বলে জানা যায়।
আবার বোধিসত্ত্ব বিভিন্ন
জীবজন্তু রূপে পারমী সম্ভার পরি পূরণের জন্য বিভিন্ন জন্মে জন্ম গ্রহণ করে ছিলেন
সেরূপ গণনায় দেখিলে ৬৫টি জাতকে রাজা, ৮৩টিতে ঋষি, ৪৩টিতে বৃক্ষ দেবতা, ২৬টিতে
আচার্য, ২৪টিতে অমাত্য, ২৪টিতে ব্রাহ্মণ, ২৪টিতে রাজ পুত্র, ২৩টিতে ভূম্যাধিকারী,
২২টিতে পন্ডিত, ২০টিতে ইন্দ্র বা শত্রু, ১৮টিতে বানর, ১৩টিতে শ্রেষ্ঠী, ১২টিতে
ধর্নাঢ্য ব্যক্তি, ১১টিতে মৃগ, ১০টিতে সিংহ, ৮টিতে রাজ হংস, ৬টিতে বর্ত্তক, ৬টিতে
হস্তী, ৫টিতে কুকুট, ৫টিতে ক্রীত দাস, ৫টিতে গুদ্র, ৪টিতে অশ্ব, ৪টিতে গরু, ৪টিতে
ব্রহ্মা, ৪টিতে ময়ূর, ৪টিতে সর্প, ৩টিতে কুম্ভকার, ৩টিতে নীচ জাতীয় লোক, ৩টিতে
গাধা, ২টিতে মৎস্য, ২টি হস্তী চালক, ২টিতে শুকুর এবং এক একটিতে বিষ বৈদ্য, কুকুর,
ধূর্ত বর্দ্ধকী কর্ম কার ইত্যাদি এরূপ গণনায় ৫৩০টি জাতক পাওয়া যায়। এই জাতকে কোথাও
কোথাও পুনরুক্তি হওয়ার কারণে উভয় ক্ষেত্রে জাতকের নির্ধারিত সংখ্যা ৫৪৭ না হইয়া
কিছু কম হইয়াছে অপর পক্ষে ৫৪৭টি জাতকের মধ্যে ৩৭২ টির ঘটনা বারানসী রাজ্যেই সংঘটিত
হয়ে ছিল দেখা যায়।
বুদ্ধের ১ম কর্ম বিপাক।
বুদ্ধত্ব লাভ করার পূর্বে
বোধিসত্ত্ব অবস্থায় ছয় বৎসর কঠোর সাধনা করে ছিলেন। তার সেই সাধনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ধর্ম সেনাপতি
সারীপুত্র স্থবিরকে বলেছিলেন হে সারীপুত্র! আমি ৩দিন অন্তর সপ্তাহ অন্তর ১৫ দিন
অন্তর আহার করেছি। তৃণ ভোজী গোময় ভোজী
ভূপতিত ফল ভোজী হয়ে জীবন যাপন করেছি। কেশ শশ্রু
মুন্ডন কার্য থেকে বিরত থেকেই বনে বনে বিচরণ করে তীব্র হীম পাতের সময়েও খালি পায়ে
শ্মশানে শয়ন করেছি, অনাহারে অর্ধাহারে আমার চক্ষু কোঠরাগত হয়ে ছিল। আমার উদর চর্ম পিষ্ট কণ্ঠ কেলীন হয়ে গিয়েছিল। ময়লা আবর্জনায় শরীরে জট বেঁধে গিয়ে ছিল। মল মূত্র ত্যাগ করতে গিয়ে মাটিতে ভুপাতিত হয়েছি।
আমাকে এমন সাধনা করতে হয়ে ছিল যে একে
দুষ্কর সাধনা বলা হয় যা কোন মানবের পক্ষে সম্ভব নয় কিন্তু কেন? অতীত জন্মের কর্ম
পৃথিবীতে যখন কাস্যপ বুদ্ধের অবতীর্ণ হয় তখন আমি জ্যোতিঃ পাল নামে এক ব্রাহ্মণের
ঘরে জন্ম গ্রহণ করে ছিলাম।
বয় প্রাপ্তির পর ঘটিকার কুম্ভকার
নামে এক যুবকের সাথে আমার বন্ধুত্ব হয়। আমার
সেই বন্ধু কাস্যপ বুদ্ধের ভক্ত ও উপাসক। সে
আমাকে এক দিন বলল, বন্ধু অনন্ত গুণা বলী সম্পন্ন ত্রিলোক পূজ্য কাস্যপ বুদ্ধ ছয় দিন
কঠোর তপস্যা করে বুদ্ধত্ব প্রাপ্ত হয়েছেন। বুদ্ধের দর্শন বড় দুর্লভ চল নয়টি গুণের অধিকারী
বুদ্ধকে দেখে আসি। তখন আমি তুচ্ছ ও অবজ্ঞা
ভরে বন্ধু ঘটিকার কুম্ভকারকে বললাম ছয় দিন তপস্যা করে যদি বুদ্ধ হওয়া যায় তাহলে ছয়
বৎসর তপস্যা করতে প্রস্তুত আছি। এই রকম
একটা তাচ্ছিল্যের সুরে অবজ্ঞা সূচক বাচনিক পাপের কারণে আমি অনেক বার নরকে উৎপন্ন হয়েছি।
নরক ভোগ করার পরেও আমাকে উপরে উল্লেখিত ভাবে
ছয় বৎসর কঠোর সাধনা করতে হয়েছে।
২য় কর্ম বিপাক
সেই সময়ে কোশল রাজ প্রসেনজিত সহ
মন্ত্রী শ্ৰেষ্ঠী ধর্ণাঢ্য ব্যক্তি ও সাধারণ প্রজারা বুদ্ধের ভক্ত হয়ে যাবার ফলে
তীর্থিকদের লাভ সৎকার কমে গিয়ে ছিল। তাই
তারা বুদ্ধের প্রতি বিদ্বেষ পরায়ণ হয়ে চিঙ্কা মান বিকা নামে এক দুষ্ঠা নারীকে
বুদ্ধের নামে অপবাদ দিয়ে বুদ্ধকে হেয় প্রতি পন্ন করার জন্য ভাড়া করলেন এবং আদেশ
দিলেন যেন প্রতি দিন সন্ধা বেলা জেতবন বিহরের পাশ দিয়ে হেঁটে যায় এবং কোন
তীর্থিকের বাড়ীতে রাত্রি যাপন করে খুব ভোরে আবার জেতনের পাশ দিয়ে হেঁটে চলে আসে। কেউ জিজ্ঞাসা করলে কোথায় যাচ্ছ? উত্তর দেয় জেতবনে।
কোথা থেকে আসছ? জেতবন থেকে। লোকেরা
যেন মনে করে ঐ রমনী সন্ধা বেলা জেতবন গিয়ে সারা রাত্রি থেকে সকালে চলে আসে। এভাবে মিথ্যা অভি নয় করে দশ মাস গত হলে এক দিন
কতক গুলি কাঠের টুকুরো রশি দিয়ে ভাল করে পেটের মধ্যে বেঁধে গর্ভবতী সেজে রাজা মহা রাজা
সহ হাজার হাজার মানুষের সামনে দেশনারত অবস্থায় বুদ্ধের সামনে এসে বুদ্ধ কর্তৃক
অপগর্ভ হয়েছে বলে উপস্থিত সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করল। দেব রাজ ইন্দ্রের আসন উত্তপ্ত হল ৪জন দেবতাকে
পাঠালেন।
তারা ছোট ইদুরের বেশ ধারণ করে
চিঞ্চা মান বিকার পেটে উঠে গেল এবং কৌশলে রশি কেটে দিল। সঙ্গে সঙ্গে সবার সামনে কৃত্রিম গর্ভের কাষ্ঠ খন্ড
মাটিতে পড়ে গেল। চিঞ্চা মান বিকার
বুদ্ধের প্রতি দোষা রূপ ও মিথ্যা অভিনয় ধরা পরে গেল। সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিত জনতা তাকে গলা ধাক্কা দিতে
দিতে সভা স্থান থেকে বের করে দিল এই পাপের ভার পৃথিবী সহ্য করতে পারল না চিঞ্চা
মান বিক জেতবনের বাইরে যাওয়ার সাথে সাথে পৃথিবী তাকে গ্রাস করে অবীচি মহা নরকে
পাঠিয়ে দিল।
অতীত কর্ম চিঞ্চা মা নবিকার এই
মিথ্যা অপবাদ দেওয়ার কারণ বর্ণনা করতে গিয়ে শিষ্যদেরকে বুদ্ধ বললেন “আমি অতীত এক
জন্মে বারানসীতে এক অত্যন্ত দরিদ্র পরি বারে জন্ম গ্রহণ করে ছিলাম। আমার নেশা করার অভ্যাস ছিল। এক দিন নেশা গ্রস্থ হয়ে নন্দ নামক এক অরহত
ভিক্ষুকে দুঃশীল, ভন্ড, পঞ্চ কাম ভোগী এবং অরহত সেজে বিনা পরি শ্রমে মানুষের দান
গ্রহণ করছে বলে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ছিলাম সেই বাচনিক পাপের ফলে বহু জন্ম মিথ্যা
অপবাদ লাঞ্ছিত হয়ে ছিলাম এবং শেষ জন্মে চিঞ্চ মান বিকা গর্ভবতী সেজে আমাকে মিথ্যা
অপবাদ দিয়েছে। ”
৩য় কর্ম বিপাক।
বুদ্ধের অপূর্ব দেশনায়
শ্রাবস্তীর রাজা মহা রাজা মন্ত্রী বর্গ তথা সাধারণ মানুষ দলে দলে বুদ্ধের অনুসারী
হতে লাগল। তখন তির্থিকেরা পুনঃ সুন্দরী
নামের এক অপূর্ব সুন্দরী চরিত্র হীনা মহিলাকে বুদ্ধের অপবাদ দেওয়ার জন্য নিয়োজিত
করল। সন্ধ্যায় দিকে উপাসক উপাসিকারা যখন
বুদ্ধের দেশনা শুনে বাড়ী ফিরতেন সুন্দরী জেতবনের দিকে যেত। কেউ জিজ্ঞাসা করলে বলত বুদ্ধকে কাম সুখ ও সেবা
দেওয়ার জন্য জেতবনে রাত কাটাতে যাচ্ছি। কোন
তির্থিকের বাড়ীতে রাত্রি যাপন করে খুব ভোরে জেতনের পাশ দিয়ে ফিরে আসে।
সেই সময়ে বুদ্ধের ভক্ত, উপাসক
উপাসিকারা ফুল বাতি ইত্যাদি নিয়ে যখন জেতবনে যাবার সময় সুন্দরীকে কোথা থেকে আসছে
জিজ্ঞাসা করলে বলত গন্ধ কুটিরে গৌতমের সাথে রাত কাটিয়ে আসতেছি এভাবে বেশ কয়েক বার
আসা যাওয়ার পর তিথিকেরা মোটা অংকের উৎকোচ দিয়ে ভাড়া টিয়া গুন্ডার সাহায্যে
সুন্দরীকে হত্যা করিয়ে জেতবনের নিকট বর্তী ফুল আর্বজনা স্তূপের নীচে মৃত দেহ লুকিয়ে
রেখে সুন্দরীকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে প্রচার করতে লাগল।
বুদ্ধের অপকীর্তি লুকানোর জন্য
গৌতমের শিষ্যরা তাকে হত্যা করে গুম করে ফেলেছে বলে প্রচার শুরু করল এবং রাজা
প্রসেনজিতের কাছে এর বিচার প্রার্থনা করল। রাজা প্রসেনজিত তিৰ্থিকদের প্রার্থনা মতে
সুন্দরীর মৃত দেহ খুঁজে বের করার অনুমতি দিলে তির্থিকেরা লুকিয়ে রাখা সুন্দরীর মৃত
দেহ আবর্জনা থেকে বের করে রাজ পথে মিছিল সহকারে বুদ্ধের নিন্দা জানাতে লাগল। এবং বিচার দাবী করল।
রাজা প্রসেনজিত গুপ্তচর নিয়োগ
করে মদতি ভাড়া টিয়া গুন্ডাদের ধরে এনে তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী প্রকৃত অপরাধী
ও অপরাধের কারণ উদঘাটন করে তির্থিক ও মদতি ভাড়া টিয়াদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির
ব্যবস্থা করেন। তখন এই ঘটনায় শ্রাবস্তী
নগরী বেশ কিছু দিন উত্তপ্ত হয়ে উঠে ছিল। অতীত
কর্ম অতীত কর্ম ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বুদ্ধ শিষ্যদের বলেন বহু পূর্বে অতীতে আমি বারনসীতে
এক দরিদ্র পরি বারে জন্ম গ্রহণ করে ছিলাম নাম ছিল মুনালী। সেই জন্মেও আমি নেশা
করতাম। এক দিন মদের নেশায় হিতা হিত জ্ঞান
শূন্য হয়ে সুরভী নামক কোন এক ভিক্ষা রত পচ্চেক বুদ্ধকে মুন্ডিত মস্তক অগ্রে ভোজন কারী
ইত্যাদি ভাষায় গালা গালি করার পাপের ফলে বহু সহস্র বছর নরক যন্ত্রণা ভোগ করেছি। কর্মের অবশিষ্টাংশে ভোগ করার জন্য সুন্দরীর
হত্যার মিথ্যা। অপবাদ প্রাপ্ত হতে বাধ্য
হয়েছি।
৪র্থ কর্ম বিপাক
আগেই উল্লেখ করেছি যে বুদ্ধ
বিরোধী তির্থিকেরা সুন্দরী নামক মহিলা টিকে হত্যা করে জেতবন বিহারের পাশে লুকিয়ে
রেখে বুদ্ধ ও বুদ্ধের শিষ্যেরা হত্যা করেছে যে, চার দিকে যখন প্রচার শুরু করে এতে
বিনা দোষে বুদ্ধ এবং শিষ্যেরা দোষী সাব্যস্থ হয়ে যায়। এলাকার লোক জনের মধ্যে কেহ কেহ এই ঘটনায় বুদ্ধের
প্রতি সন্দেহ পোষণ করতে থাকে রাজা যখন তার রাজ শক্তি ব্যবহার করে গুপ্তচর দ্বারা
দোষী। নিরূ পণে সক্ষম হয়ে ছিলেন। সেই দোষীদের দ্বারা স্বীকার উক্তি মূলক প্রচারণা
শ্রাবস্তীর রাজ পথে ঘোষণা করাতে বাধ্য করেন।
শ্রাবন্তীর লোক জনের মধ্যে
তিৰ্থিকদের প্রতি ঘৃণা এবং বুদ্ধের প্রতি শ্রদ্ধা বোধ বেড়ে যায় এভাবের সুন্দরীকে
হত্যার অভি যোগে অভি যুক্ত হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে বুদ্ধ শিষ্যদের নিকট তাঁর অতীত জন্মের
কাহিনী বর্ণনা করেন এভাবে অতীত জন্ম অনেক অতীতে আমি এক ধর্ণাঢ্য পরিবারে জন্ম গ্রহণ
করে যখন সংসারের প্রতি বীত শ্রদ্ধ হয়ে সন্ন্যাস ধর্ম গ্রহণ করি কিন্তু কোন উন্নতি
লাভ করতে পারিনি সেই সময়ে অপর এক জন ঋষি যিনি সত্যি কার ভাবে ধ্যান বল সম্পন্ন এবং
আকাশ পথে বিচরণ করার ক্ষমতা রাখেন তার প্রতি হিংসা পরায়ণ হয়ে উঠি। এক দিন আকাশ মার্গে উড়ে ঐ ঋষি আমার সামনে
উপস্থিত হলে তাকে আমি গোপনে কাম ভোগী ও দুঃশীল বলে অপবাদ দিলে এতে আমার শিষ্যরা
হর্ষধ্বনী ও হাত তালি দিয়ে আমাকে সমর্থন করে এই বাচনিক কর্মের বিপাকে আমি এবং আমার
পাঁচ শত শিষ্য সবাই সুন্দরীকে হত্যা করেছি মর্মে মিথ্যা দোষ অভি যুক্ত হয়ে ছিলাম।
পঞ্চম কর্ম বিপাক
দেবদত্ত বুদ্ধকে হত্যা করে
নিজে বুদ্ধ হবার মানসে রাজা অজাত শক্রর সহায় তায় বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেও যখন
ব্যর্থ হয় তখন বুদ্ধকে নিজের হাতে খুন করার জন্য গৃধ্রকুট পর্বতের চুরায় উঠে
অবস্থান করতে থাকে। সেই সময়ে বুদ্ধ পর্বতের নীচের বিশ্বের সকল প্রাণীকে মৈত্রী
বিতরণ করে করে পায়চারি করছিলেন। দেবদত্ত
সেই সুযোগে একটি পাথর খন্ড বুদ্ধের মস্তকে পতিত হয় এমন ভাবে ঠেলে দিল কিন্তু অন্য
একটি বড় পাথর খন্ড এসে ঐ পাথর খন্ডের গতি রোধ করে দিল। দুই পাথরের ঘৰ্ষণে ছোট একটি পাথরের টুকুরা
বুদ্ধের পায়ে এসে লাগে এতে বুদ্ধের বৃদ্ধাঙ্গুলে আঘাত লাগে এবং রক্ত পাত হয়।
অতীত কর্ম এই বিপাকের কারণ ছিল
অতীত এক জন্মে বুদ্ধ শ্রেষ্ঠী পুত্র হিসাবে জন্মগ্র হণ করে ছিল তখন তার পিতার দুই
স্ত্রী ছিল। দুই স্ত্রীর দুই ছেলে বোধিসত্ত্ব
এবং তার অপর সৎ ভাই পিতার মৃত্যুর পর সমস্ত সম্পত্তির মালিক হয়। বড় ভাই বোধিসত্ত্ব তার ছোট সৎভাইকে হত্যা করে
সমস্ত সম্পত্তির মালিক হবার জন্য বৈমাত্রেয় ভাইকে মিথ্যা ছল নায় গভীর বনে নিয়ে গিয়ে
এক নির্জন স্থানে পাথর খন্ড দিয়ে নির্মম ভাবে আঘাত করে এতে ছোট ভাই মারা গেলে মৃত
দেহ পর্বতের খাদে নিক্ষেপ করে সেই অপকর্মের বিপাকে দেবদত্তের নিক্ষেপিত প্রস্তুর
খন্ডের ছোট একটি টুকরার দ্বারা আঘাত প্রাপ্ত ও রক্ত পাত হয়েছে।
৬ষ্ঠ কর্ম বিপাক
দেবদত্তের নিক্ষে পিত পাথরে
বুদ্ধের বৃদ্ধাঙ্গুলি আঘাতের ফলে রক্ত জমাট বেধে গিয়ে ছিল এবং উক্ত জমাট বাঁধা
রক্ত বের করার জন্য জীবকের দ্বারা অস্ত্রো পচার করতে হয়ে ছিল। অতীত জন্ম এভাবে বৃদ্ধাঙ্গুলির অস্ত্রো পচার ও
রক্ত ঝড়ার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন অতীত এক জন্মে সময় ভিক্ষা রত এক পচেক
বুদ্ধকে বালক সুলভ মন দিয়ে খেলার ছলে দুষ্টামি করে একটি পাথর ছুড়ে মেরে ছিলাম
পাথরটি তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলিতে আঘাত করে এবং রক্ত বের হয়ে ছিল। সেই পাপ কর্ম
সম্পাদনের ফলে শেষ জন্মে বুদ্ধ হয়েও আমাকে এই যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়েছে।
৭ম কর্ম বিপাক
মগধ রাজ অজাত শত্রু বুদ্ধ বিরোধী দেবদত্তের গুরু শিষ্য মিলে বুদ্ধ
হত্যার উদ্দেশ্যে রাজার দুর্ধর্ষ নালাগিরি হস্তীকে ১০ মন মদ পান করিয়ে মাতাল করে
ভিক্ষান্ন গ্রহণের সময় বুদ্ধকে পদ দলিত করে মেরে ফেলার জন্য রাজ পথে প্রেরণ করে ছিলেন।
ত্রিলোক পুজ্য বুদ্ধ মহা মৈত্রী করুণা দিয়ে
সেই মাতাল হস্তীকে হাত উচিয়ে বলে ছিলেন “হে নালাগিরি সর্ব প্রকারে অকুশল পাপ মুক্ত
বুদ্ধকে তুমি হত্যার চিত্ত নিয়ে অগ্রসর হইওনা প্রমত্ত হইওনা অপ্রমত্ত হও। ” এই বলে
হাতির প্রতি মৈত্রী বর্ষণ করলে অবুজ হাতিও বুদ্ধের পায়ে লুটিয়ে পরে। অতীত কর্ম নালাগিরি
হস্তী বুদ্ধের দিকে আক্রমণাত্মক চিত্ত নিয়ে তেড়ে আসার কারণ বর্ণনা প্রসঙ্গে বুদ্ধ
তাঁর শিষ্যদেরকে বলেন অতীতে আমি বারানসীতে এক মাহুত কূলে জন্ম নিয়ে মাহুত বিদ্যায়
পারদর্শী হয়ে ছিলাম।
এক দিন হস্তী পৃষ্ঠে আরোহণ করে
নগর প্রদক্ষিণ করার সময় পিন্ডাচরণ রত এক পক্ষেক বুদ্ধকে দেখতে পাই। সেই পচেক বুদ্ধ ধীর গতিতে পথ চল ছিল এবং এক সময়
আমার হাতীর মুখো মুখি হলে, হে মুণ্ডিত ভিক্ষু সরে যাও না হলে হাতী দিয়ে মারব
ইত্যাদি কটু বাক্য ব্যবহার করি কিন্তু তিনি স্বভাব সুলভ ভাবে হাট ছিলেন। তিনি দ্রুত আমার হাতীর সামনে থেকে সরে না যাওয়ায়
এতে আমি অপমান বোধ করি এবং ভিক্ষুর গায়ের উপর দিয়ে হাতি চালিয়ে দেবার চেষ্টা করি
তিনি ঋদ্ধি বলে আকাশে উঠে গেলেন এবং তার এক খানা পরনের চীবর নীচে পরে যায়। সেই চীবর টাকে আমি হাতি দিয়ে দলিত ও মথিত করি। ক্রোধ চিত্তে ভিক্ষুকে হাত দিয়ে আক্রমণ করার চেষ্টাও চীবর দলিত মথিত করার পাপের
ফলে নালাগিরি আমাকে প্রবল বেগে মারতে ছুটে এসে ছিল।
৮ম কর্ম বিপাক
দেবদত্তের পাথর নিক্ষেপের ফলে
বুদ্ধের পায়ের রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার আঘাত রাজ বৈদ্য জীবকের ঔষধ দিয়ে ভাল করতে না
পারায় তার বৃদ্ধাঙ্গুলে ছুরি চালিয়ে অপারেশন করতে হয়ে ছিল। অতীত কর্ম সর্ব প্রকার পাপ বর্জিত এই
মহাকারুণিক বুদ্ধের বর্ণনা করে শিষ্যদেরকে তিনি বলেন অতীতে এক জন্মে আমি রাজী হয়ে
জন্ম নিয়ে ছিলাম এবং অসৎ সঙ্গীদের সঙ্গে মেলা মেশা করে মদ্য ও সুরাপানে অভ্যস্ত হয়ে
পড়ি। এক দিন আমি অত্যাধিক নেশা করে জ্ঞান
হীন হয়ে আমার এক কর্ম চারীকে বিনা কারণে নিজের তলোয়ার দিয়ে হত্যা করি। সেই পাপের ফলে অনেক বার আমার নরক গমন হয়েছে। বহু জন্ম নরক ভোগ করার পরও আমার দুঃখ যন্ত্রণা
নিঃশোষিত হয়নি। অবশিষ্টাংশ বিপাক বুদ্ধ হয়েও
জীবক দ্বারা বৃদ্ধাঙ্গুলীতে ছুরি চালাতে হয়ে ছিল।
৯ম কর্ম বিপাক।
বুদ্ধ মাঝে মাঝে নাকি মাথায়
বেদনা অনুভব করতেন। এই শির ব্যথার কারণ
বর্ননা প্রসঙ্গে ভিক্ষু সংঘদের কাছে তিনি যা বলেছেন তা নিম্নরূপ। অতীত কর্ম অতীত
কোন এক জন্মে আমি জেলের ঘরে জন্ম গ্রহণ করে ছিলাম। মৎস্য ধরে, মৎস্য মেরে, মৎস্য বিক্রি করে আমার মাতা
পিতা জীবিকা নির্বাহ করতেন। এক দিন এক বড় মৎস্য ধরা পড়লে আমার পরিবারের সকলে
মিলে মাছ টাকে মাথায় সজোরে আঘাত করতে থাকে। নির্মম ভাবে মাছ টিকে যন্ত্রণা দিতে
থাকলে মাছটি লাফা লাফি করে প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করে মাছের মাথায় আঘাত করার দৃশ্য
দেখে আমি ভীষণ ভাবে উল্লাসিত হয়ে ছিলাম।
তির্যক প্রাণীর প্রতি এই নিষ্ঠুর আচরণ ও মারার দৃশ্য দেখে তা সমর্থন করার
পাপের বিপাকে আমি মানব জন্ম লাভ করেও বহু জন্ম শির রোগে কষ্ট পেয়েছি এবং অবশিষ্ট
পাপ বর্তমানে বুদ্ধ হয়েও ফল ভোগ করছি।
১০ম কর্ম বিপাক।
বুদ্ধ দ্বাদশতম বর্ষাবাস যাপন
করেন বেরঞ্জা নামক প্রদেশের বেরঞ্জা নামক গ্রামে।
সেই সময়ে বুদ্ধের শিষ্যগণ ভিক্ষার জন্য বের হয়ে খালি ছেবাইক হাতে ফিরে আসতেন।
ঐ সময়ে মার দেবতার প্রভাবে সবাই বুদ্ধ এবং
শিষ্যদের হায়োইং দিতে ভুলে যেতেন। তখন
সেবক আনন্দ অশ্ব ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে যব ভিক্ষা করে নিজের হাতে ছাটাই ও পরিষ্কার
করে বুদ্ধকে পরিবেশন করতেন। স্বাদ হীন
শক্ত অত্যন্ত নিম্ন মানের ছায়োইং বুদ্ধ বাধ্য হয়ে ভোজন করে ছিলেন। অতীত কর্ম যেই বুদ্ধকে রাজা মহা রাজারা রাজ কীয়
ছায়োইং ভোজনের জন্য প্রতি যোগিতা শুরু করে বেরঞ্জা গ্রামে বুদ্ধের এই নিম্ন মানের
আহার ভোজন করার কারণ ছিল।
ফুসস বুদ্ধ পৃথিবীতে উৎপন্ন
যখন হয়ে ছিল। আমি এক শ্রদ্ধা হীন পরিবারে জন্ম গ্রহণ করে ছিলাম। এক দিন দেশ বাসী যখন বুদ্ধকে নিমন্ত্রণ করে,
চর্ব চোষ্য, লেহ্য, পেয় নানা উপাদেয় খাদ্য সামগ্রী দিয়ে যখন বুদ্ধকে আপ্যায়িত
করছিলেন তখন আমি বলে ছিলাম এই মুন্ডিত মস্তক ব্যক্তি দুগ্ধ পায়েস আহার করে করে দিন
যাপন করে। এহেন ভিক্ষুদের গন্ধ যুক্ত যব
খেতে দেওয়া উচিত! কি প্রয়োজন এই সুস্বাদু আহার দিয়ে? উক্ত কটু মন্তব্য করার পাপের
ফলে বেরঞ্জ গ্রামে তিন মাস বর্ষাবাস যাপন কালে দুর্গন্ধ স্বাদ হীন যব খেতে বাধ্য হয়ে
ছিলাম। কর্ম। বিপাক বড় রহস্যময় ও ভয়ংকর। বুদ্ধও নিস্কৃতি পাননি সাধারণ মানুষের
কথাই বা কি
১১তম কর্ম বিপাক
তথাগত ভগবান বুদ্ধ মাঝে মাঝে
কোমর ব্যাথায় কষ্ট পেতেন। এই কোমর ব্যাথার
কারণ প্রসঙ্গে বুদ্ধ বলেন। অতীত জন্ম এক সময়ে
আমি বারানসীতে এক শ্ৰেষ্ঠী কুলে জন্ম গ্রহণ করে ছিলাম আমার নাম ছিল বামন কারণ আমার
দেহ অত্যন্ত ছোট আকৃতির ছিল। কিন্তু আমার শরীরে
৫টি হাতীর শক্তি ছিল। সেই কারণে আমি
কুস্তি খেলাকে পেশা হিসাবে গ্রহণ করে ছিলাম। সেই সময়ে মল্ল রাজার মদত পুষ্ট মল্লক নামে এক
কুস্তিগীর বারানসীতে এসে রাজ পথে ঘুরে ঘুরে তার সাথে মল্ল যুদ্ধে প্রতি যোগিতা
করার জন্য গর্ব ভরে আস্ফালন করতে থাকে আমি সেই আস্ফালন সহ্য করতে না পেরে তার
অহংকার চুর্ণ করার জন্য আমার সাথে মল্ল যুদ্ধের আহ্বান জানাই মল্লককে।
অগণিত দর্শকের সামনে আমি ৫টি
হস্তীর শক্তি প্রয়োগ করে মন্ত্রের মুখো মুখি হয়ে কিছু বুঝে উঠার আগেই তীব্র গতিতে
তার ১হাত ধরে উপরে নিক্ষেপ করি। ঘুরে ঘুরে
সে নীচে পরার আগেই পা ধরে সজোড়ে মঞ্চের সাথে আঘাত করি এতে মল্লক কুন্তীগিরের কোমর
ভেঙ্গে গিয়ে যন্ত্রণায় বেহুশ হয়ে যায়। পরে
অনেক চিকিৎসার পর মল্ল সুহ হয় এবং আমি সেই পেশা ত্যাগ করি। কোমর ভেঙ্গে ধরাশায়ী
করার কর্ম। বিপাকের ফলে আমাকে মাঝে মাঝে ব্যাথা অনুভব করতে হয়।
১২তম ও শেষ কর্ম বিপাক
বুদ্ধের
শেষ আহার ছিল চুন্দ নামে এক স্বর্ণকারের ছায়োইং। ঐ আহার গ্রহণের পর পরই বুদ্ধের রক্ত
আমাশয় শুরু হয়ে ছিল এবং এত দুর্বল হয়ে পড়ে ছিলেন যে, চলার শক্তিও হারিয়ে ফেলে ছিলেন।
অতীত কর্ম এর কারণ হিসাবে বুদ্ধ বলেন অতীতে
আমি এক শ্ৰেষ্ঠী কুলে জন্ম গ্রহণ করি। চিকিৎসা বিদ্যা অধ্যয়ন করে আমি যশস্বী ও খ্যাতি
মান হয়ে ছিলাম যে সর্বত্র। আমার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে ছিল। সেই সময়ে এক শ্রেষ্ঠ পুত্র দুরা রোগ্য ব্যাধিতে কষ্ট
পাচ্ছিল। অনেক চিকিৎসক চিকিৎসা করেও তাকে সুস্থ
করতে পারেনি। তাকে রোগ মুক্ত করে দিতে পারলে
আমাকে তারা অনেক ধন সম্পদ উপঢৌকন হিসাবে দেওয়ার প্রতি শ্রুতি প্রদান করে।
সেই প্রতি শ্রুতির ভিত্তিতে আমি আমার চিকিৎসা বিদ্যার সমস্ত বিদ্যা প্রয়োগ করে তাকে সুস্থ করে তুলি। কিন্তু সুস্থ হওয়ার পর শ্রেষ্ঠী তার প্রতি শ্রুতি রক্ষা করে নাই। এতে আমি প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে রোগ এখনও পুরো পুরি নির্মূল হয়নি বলে আরও ঔষধ সেবনের পরামর্শ দিলে সে সম্মত হলে আমি এমন এক ঔষধ প্রয়োগ করি তাতে শ্রেষ্ঠী পুত্রের রক্ত আমাশয় শুরু হয়ে যায় এভাবে কিছু দিন পর সে মারা যায়। এই ইচ্ছা কৃত কর্মের ফলে আমি দীর্ঘ কাল নরক যন্ত্রণা ভোগ করি। বুদ্ধ হয়েও পরিনির্বাণের পূর্বে আমার রক্ত আমাশয় রোগে অনেক কষ্ট পেতে হয়েছে। কাজেই বুদ্ধ বলেন তোমরা বিন্দু পরিমাণ পাপ কার্য করিও না, পাপ কোন দিন আপনাকে ক্ষমা করবে না এবং ক্ষমা করারও কেউ নাই। বুদ্ধের ১২টি কর্ম বিপাক সমাপ্ত।