রাহুলের সংক্ষিপ্ত জীবনী

রাহুলের সংক্ষিপ্ত জীবনী

কপিলা বস্তুর বহু জন বুদ্ধের ধর্ম গ্রহণ করিল।  তরুণ বয়স্ক দিগের মধ্যে যাহারা সদ্য ভূক্ত হইলেন তাহাদিগের মধ্যে প্রজাপতির পুত্র, সিদ্ধার্থের বৈমাত্রেয় ভ্রাতা আনন্দ, তাঁহার পিতৃসা পুত্র শ্যালক দেবদত্ত, এবং অনুরুদ্ধ নামক এক জন দার্শ নিক ছিলেন।  আনন্দ বুদ্ধের অতি প্রিয় ছিলেন; শিবর্গের মধ্যে।  বুদ্ধ তাঁহাকে সর্বাপেক্ষা স্নেহ করিতেন; তিনি গভীর ধী শক্তি সম্পন্ন ও বিনয়ী ছিলেন এবং তথাগতের নির্বাণ প্রাপ্তির সময় পর্যন্ত তিনি সর্বদা তাহার নিকটে অবস্থান করিয়া ছিলেন।


আরো দেখুন: জেতবন

আরো দেখুন: যশোধরা

 

রাহুলের সংক্ষিপ্ত জীবনী

রাহুলের সংক্ষিপ্ত জীবনী


কপিলা বস্তুতে আগমনের পর সপ্তম দিবসে, যশো ধরা সপ্ত বর্ষীয় রাহুল কে রাজ পুত্রোচিত বেশ ভূষায় সুশোভিত করিয়া তাহাকে কহিলেন: “এই যে সাধু দেখিতেছ, যিনি ব্রহ্মার ন্যায় গৌরবান্বিত প্রতীয় মান হইতে ছেন ইনি তোমার পিতা।  তিনি বৃহৎ চতুবিধ ধন ভাণ্ডারের অধীশ্বর, ঐ ভাণ্ডার আমি এখনও দেখি নাই।  তাহার নিকট গমন করিরা ঐ ভাণ্ডার প্রার্থনা কর, যে হেতু পুত্র পিতার সম্পদের অধিকারী।  রাহুল উত্তর করিলেন, “আমি পিতা জানি না, এক মাত্র নৃপতি কেই জানি। আমার পিতা কে?” রাজপুত্রী বালককে ক্রোড়ে লইয়া গবাক্ষ হইতে বুদ্ধকে নির্দেশ করিলেন, ঐ সময়ে বুদ্ধ আহার করিতে ছিলেন।

 

পিতা! নিকটে দণ্ডায় মান হইয়া তিনি পুন রায় কহিলেন, শ্রমণ, তোমার ছায়াও পরম শান্তি প্রদ।  আহার সমাপ্ত হইলে, তথাগত বালক কে আশীর্বাদ করিয়া প্রাসাদ ত্যাগ করিলেন, কিন্তু রাছল তাঁহার অনুসরণ করিয়া পিতার নিকট উত্তরাধিকার প্রার্থনা করিলেন।  বালক কে কেহই নিষেধ করিল না, বুদ্ধ নিজেও করিলেন না।  তৎপরে বুদ্ধ শারি পুত্রের দিকে ফিরিয়া কহিলেন, আমার পুত্র উত্তরাধিকারের প্রাণী।  যে ধন অচিরে ধ্বংস প্রাপ্ত হইবে, সে ধন আমি তাহাকে দিব না, উহা কেবল মাত্র উদ্বেগ ও দুঃখ আনয়ন করিবে; কিন্তু আমি তাহাকে পবিত্র জীবনের উত্তরাধিকার দিতে সক্ষম, উহা অক্ষয় ভাণ্ডার।

 

সর্বান্ত করণে রাহুল কে সম্বোধন করিয়া বুদ্ধ কহিলেন, স্বর্ণ, রৌপ্য ও রত্নাদি আমার নাই।  কিন্তু তুমি যদি অক্ষয় ভাণ্ডারের প্রার্থী হও এবং উহা বহন ও রক্ষা করিতে সমর্থ হও, তাহা হইলে আমি তোমাকে চতুরঙ্গ সত্যের অধিকারী করিব, উহা তোমাকে অষ্টাঙ্গ ধর্ম মার্গ শিক্ষা দিবে।  মনের উন্নতি সাধন পূর্বক সর্বোত্তম অবস্থা লাভের নিমিত্ত যাহারা জীবন উৎসর্গ করিয়া ছেন, তুমি তাহাদের সঙ্ঘ ভুক্ত হইবে কি? রাহুল দৃঢ়তার সহিত উত্তর করিলেন, হ্যা। 

 

রাহুল ভিক্ষু সঙ্ঘভুক্ত হইয়াছেন শুনিয়া নৃপতি শোকার্ত হইলেন।  তিনি পুবেই সিদ্ধার্থ ও আনন্দ, দুইপুত্র এবং ভাগিনেয় দেবদককে হারাইয়া ছিলেন। এই বার পৌত্র কে হারাইয়া তিনি বুদ্ধের নিকট গিয়া অভি যোগ করিলেন।  তদনন্তর বুদ্ধ অঙ্গীকার করিলেন যে, অতঃ পর কোন অপ্রাপ্ত বয়স্ক কে তাহার পিতা মাতা কিম্বা অভি ভাবকের অনুমতি না লইয়া অভি ষিক্ত করিবেন না।  রাহুল জীবনী সমাপ্ত


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url