শুভা
শুভা
“পথ ছাড়ো।” “তাহবেনা, পথ ছাড়তে পারবোনা।”
“কেন, আমি কি অপরাধ করেছিযে, তুমি আমার পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ালে?” “সুলোচনে, তোমায়
দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি, ‘আসক্ত হয়ে পড়েছি, আমার তীব্র লাল সার সৃষ্টি হয়েছে। এসো, আমার নিকট এসো।” এ বলে যুবক হস্ত প্রসারিত
করে অগ্রসর হল। তরুণী শাণিত দৃষ্টি নিক্ষেপ
করে কঠোর কণ্ঠে বললেন “সাব ধান, এদিকে এসো না; আমায় স্পর্শ করবে না। আমি বিশুদ্ধ দেহ, নির্মল চিত্ত। কেন আমার পথ রোধ করছ? তুমি কলুষিত চিত্ত, আমি পবিত্র,
তুমি রাগ দুষ্ট আমি বিরাগ চিত্ত; কি হেতু আমার পথে বিঘ্নের সৃষ্টি করছ? “তুমি সুন্দরী,
তরুণী, পূর্ণ যুবতী, এ বেশে কি তোমায় শোভা পায়? প্রব্রজ্যার কি প্রয়োজন এতে কি লাভ?
কাষায় বস্ত্র দূরে নিক্ষেপ কর। এসো, চলো ওই
মনোরম পুষ্প শোভিত উপবনে প্রমোদে রত হই।
আরো দেখুন: কর্ম ফল অবিশ্বাসী রাজা পায়াসী
আরো দেখুন: ইসিদাসী
![]() |
শুভা |
বিচিত্র কুসুম সম্ভারে সুশোভিত, পুষ্পের আকুল করা মধুর গন্ধে দিগন্ত আমোদিত। বসন্তের প্রাণ জুড়ানো মলয় মারুত, কোকিলের সুধা ঝরা কণ্ঠে মুখ রিত পুষ্পিত উপবন কত মনোরম। এসো, ওই রমণীয় নিকুঞ্জে আমরা আমোদিত হই। ওই শোন বায়ু কম্পিত পাদপের মর্মর ধ্বনি, এ বনে একাকী কি রূপে তপ্ত হবে? হিংস্র জন্তু, বিষ ধর সর্প সমাকুল জন হীন ভয়ানক মহা বনে একাকী আর অগ্রসর হয়ো না সুবর্ণ প্রতি মাসম অনিন্দ্য সুন্দরী তুমি, নন্দন কাননে অপ্সরার মত অনুপমা।কাশীর সর্বোত্তম সুন্দর সূক্ষ্ম বস্ত্র তোমার বরাঙ্গে শোভা পাবে।কিন্নরীর মত তুমি সুলোচনা।
তোমার চেয়ে প্রিয়তর বস্তু এজগতে আমার আর অন্য কিছুই
নেই। এ বন ভূমিতে তোমার সেবায় আমি নিযুক্ত
থাকবো।আমার কথা শোন, “আমার প্রাসাদে পরিচারিকা বেষ্টিত
হয়ে, কাশীর সূক্ষ্ম রেশমী বস্ত্র পরিধান করে, সুবাসিত কুসুম মাল্যে ও অঙ্গ বিলেপনে
সুশোভিত হয়ে সুখে অবস্থান কর। মণিমুক্তা খচিত
বহু মূল্য অলঙ্কারে তোমায় সাজিয়ে রাখবো। সুকোমল শুভ্র বসনাস্তৃত নবনির্মিত রেশমী তুলাময়ী
শয্যা হবে তোমার; চন্দন ও পুষ্পসার সুবাসিত মহার্ঘ। শয্যায় করবে সুখ শয়ন।”
“যুবক, যে দেহ দেখে তুমি বিমুগ্ধ হচ্ছো সে দেই ঘৃণ্য অশুচি পূর্ণ, ক্ষণভঙ্গুর! এ দেহে গ্রহণ যোগ্য এমন কি আছে, যা দেখে তুমি এরূপ বলছ? “অয়ি সুন্দরী, তুমি মৃগী নয়না নারী, পর্বতান্তরের কিন্নরীলোচনা সদৃশ তুমি মদি রাক্ষী। আকর্ণ বিশ্রান্ত করা এমন সুন্দর চোখ আমার চোখে পড়েনি, যা অপূর্ব, যা রহস্যময়, যার আকর্ষণ অজেয়। তোমার ওই লোভ নীয় জ্যোতির্ময় আঁখি যুগল আমার অতৃপ্ত পিপাসাকে উদ্দীপ্ত করে তুলছে। অয়ি রত্তোৎপল গর্ভে, কেশ রাজী যেমন শোভা পায়, সেরূপ সুন্দর আঁখি রোম শোভ মান তোমার স্নিগ্ধ মসৃণ স্বর্ণোজ্জ্বল বদনে শোভন মোহন নয়ন যুগল দর্শনে আমার অতৃপ্ত লালসা উদ্দীপিত হয়ে উঠেছে। অয়ি কিন্নরীমন্দ লোচনে, তুমি আমার চোখের অন্তরালে দূরে অবস্থান করলে তোমায় ভুলতে পারবো না, তোমার আয়ত সুন্দর।
ভ্রুযুগল, মনো মোহন নয়ন দ্বয়। তোমার ওই মোহ নীয় আঁখি যুগল অপেক্ষা এজগতে তেমন আর অন্য কোন প্রিয়তর বস্তু আমার নেই।” “হে যুবক, তুমি বিভ্রান্ত হয়েছে, বিপথ গামী হয়েছো। তুমি নভো স্থিত চন্দ্রকে ক্রীড়ানক করতে অভিলাষী। সুমেরু উল্লঙ্গনের প্রত্যাশী” আশ্চর্য, বুদ্ধ কন্যাকে কামনা করছ! স্বর্গ মর্ত্যে এমন কিছু নেই, যা আমার কাম তৃষ্ণার উদ্রেক করতে সক্ষম। এ কাম তৃষ্ণা যে কি রূপ তাও জানি না।
হস্ত হতে দূরে নিক্ষিপ্ত জ্বলন্ত ইন্ধন
অথবা প্রক্ষিপ্ত বিষ পাত্র সম তা অন্তর্হিত হয়েছে। আর্য মাগেরর মাধ্যমে তা সমূলে উৎপাটিত হয়েছে। যে নারী অন ভিজ্ঞ, পঞ্চ স্কন্ধ অজ্ঞাত, ধর্ম দর্শন
করেনি, প্রমাদ গ্রস্ত, সেরূপ নারীকে প্রলুব্ধ করতে পার। আমি কিন্তু প্রবুদ্ধা বুদ্ধ শ্রাবিকা।এ কারণেই তুমি ধ্বংস হবে, বিধ্বস্ত হবে। মহা দুঃখে নিমগ্ন হবে।
নিন্দা স্তুতি, ইষ্টা নিষ্ট, সুখ দুঃখ সকল অবস্থায় আমি স্মৃতি মতী। অষ্ট লোক ধর্মে আমি অবিচলিত। জগৎ অনিত্যময়, লোভ দ্বেষ মোহ বড় অনর্থকর, কাম তৃষ্ণা প্রপঞ্চময় দুঃখময়, এসব আমি সম্যক জ্ঞাত আছি, তাই প্রতি আমি সম্পূর্ণ নির্লিপ্ত। আমি আর্য অষ্টাঙ্গিক মার্গারূঢ়া, নির্বাণ গামিনী বুদ্ধ শিষ্যা। এখন আমি সুখ দুঃখের অতীত, কাম রাগ হীন, তা মুক্ত। তাই শূন্যা গারে আমি অভি রমিত হই। নির্জন বাসেই আমি তপ্ত, আনন্দিত। সুচি ত্রিত কাষ্ঠ পুত্ত লিকা সূত্র ও কীলকা বদ্ধ হয়ে বিচিত্র মনোরম নৃত্য ভঙ্গী প্রদর্শন করলে।
সূত্র ও কীলক অপসারিত হলে পুতুল তখন বিকল, ছিন্ন ভিন্ন ও খন্ড বিখন্ড হয়ে যায়। তখন এর কোন অংশ তোমার মনো রঞ্জন করবে? চিন্তা করে দেখ, আমার দেহও সেরূপ। এ দেহ বত্রিশ প্রকার ঘৃণ্য পদার্থের সমষ্টি মাত্র। পৃথিবী আ তেজ বায়ু এ চার মহা শক্তির সময়ে এদেহ প্রবর্তিত হয়। এ চার ধর্মের অপ্রবর্তনে এ দেহ বিকল হয়, অচল হয়।
এ দেহ ব্যবচ্ছেদ করে স্নায়ু, অস্থি, অন্ত্র, প্লীহা, ফুস ফুস, হৃৎপিণ্ড প্রভৃতি ৩২ প্রকার ঘৃণ্য পদার্থের এক এক অংশ যখন পৃথক করা হবে, তখন দেহ নামক কিছু কি বিদ্যমান থাকবে? বল? কোন অংশ তোমার মনো রঞ্জন করবে? তখন দেহের যা রূপ লাবণ্য, চক্ষুর সৌন্দর্য, এর কোনও অস্তিত্ব থাকবে কি? ভিত্তি গাত্রে সুদক্ষ চিত্র করের তুলি চালনায় অঙ্কিত অপরূপ রূপ লাবণ্য বতী রমণীর চিত্র দেখে জীবন্ত নারী মনে করে অনুরাগ রঞ্জিত বিপরীত সংজ্ঞা উৎপন্ন করলে তা নিরর্থক মিথ্যা সংজ্ঞা নয় কি? বিড়ম্বিত হওয়া নয় কি? স্বপ্নে সুবর্ণ বৃক্ষ দেখে অথবা ইন্দ্র জালের প্রভাবে প্রদর্শিত অত্যাশ্চর্য বিষয়কে সত্য মনে করা অন্ধতা ও অজ্ঞানতা নয় কি?
আমার দেহ, রূপ ও চক্ষুর অবস্থাও তাদৃশ। চক্ষুর স্বরূপ এবং এর প্রকৃত অবস্থা সম্বন্ধে তুমি অজ্ঞত। তাই আমার চক্ষু দেখে তুমি মুগ্ধ ও লাল সায় অভি ভূত হয়ে পড়েছ। তা তোমার একান্তই মোহাঙ্গতা। চক্ষু কি রূপ পদার্থ তা শোন চক্ষু হল বৃক্ষ কোটরে স্থাপিত লাক্ষা গুটিকার মত। চক্ষু কোটরে উদ্ভুত জলবুদ্বুদ সদৃশ, অশ্রু বাহী অক্ষি গৃথের জনক, সপ্ত পটল মুক্ত বুদ্বুদ বা পিন্ড মাত্র। এ মিশ্র পিন্ডই চক্ষু, তা আর অন্য কিছুই নয়, দুর্গন্ধ বাহী ঘূণিত অশুচি মাত্র।
এরূপ চোখের প্রতি তুমি মোহ গ্রস্ত, তৃষিত ও লালা য়িত।” এ বলে চারু দর্শনা নারী নির্বিকার চিত্তে স্বহস্তে স্বীয় একটি চক্ষু উৎপাটন করে যুবকের হস্তে দেবার সময় বললেন “হে আসক্ত যুবক, নাও, তোমার আকাঙ্খিত চক্ষু নাও।” তখন যুবকের কণ্ঠে আতঙ্ক, বিস্ময় ও ক্ষোভ মিশ্রিত বিকট স্বর ধ্বনিত হল। অন্তর্হিত হল তাঁর কাম লালসা। বলল আর্ত কণ্ঠে “ব্রহ্ম চারিণী, আমায় ক্ষমা কর। শীঘ্রই তুমি আরোগ্য লাভ কর। এরূপ অন্যায় আমি আর করবো না। তোমার মত অসদৃশ শুদ্ধ চারিণীর প্রতি অপরাধ করে প্রজ্জ্বলিত অগ্নি আলিঙ্গন বা বিষধর সপকে স্পর্শ করার মত দারুণ দুঃখের কারণ উৎপন্ন করেছি। তোমার স্বস্তি হোক, আমায় ক্ষমা কর।” এ বলে ধূর্ত যুবক বিরাট মর্ম বেদনা নিয়ে বিমর্ষ বদনে দ্রুত পদে সেখান হতে পালিয়ে গেল।
‘রাজ গৃহ’ প্রাচীন ভারতের সুপ্রসিদ্ধ নগর। এ ঐশ্বর্য পূর্ণ নগরই ছিল মগধ রাজ বিম্বি সারের রাজ ধানী। গিরি শোভিত পূর্ণ্য তীর্থ এ রাজ গৃহ শাক্য মুণি বুদ্ধের সাধনা ক্ষেত্র। পবিত্র ভিক্ষু সমাকুল কাষায় দীপ্ত রাজ গৃহে বিম্বি সার নির্মিত ইতি হাস প্রসিদ্ধ ‘বেণুবন বিহার’ ভিষক শ্রেষ্ঠ জীবক নির্মিত ‘আম্র কানন বিহার’ বিরাজ মান ছিল। তথাগত বুদ্ধ জীবনে বহু বার বুদ্ধ কৃত্য সম্পাদন মানসে সশিষ্য এ পুণ্য পূত স্থানে সমাগত হয়ে ছিলেন এবং প্রয়োজনানু রূপ তথায় অবস্থান করে ছিলেন।
এ রাজ গৃহে বিত্ত শালী এক পন্ডিত ব্রাহ্মণ অবস্থান করতেন। তাঁর এক ‘বিদুষী’ বুদ্ধি মতী ও শীল বতী কন্যা রত্ন ছিলেন। নাম ‘শুভা’ মেয়েটি মনোরমা ও সুশোভনা হেতু তাঁর নাম করণ করা হয় ‘শুভা’। তাঁর অন্তর যেমন শোভন ও মধুর, আচরণও ছিল শোভন মোহন। তাঁর এ শিব সুন্দর চিত্ত বহু অতীত কাল হতেই সুসংস্কৃত, সুসমৃদ্ধ ও সুসংঘঠিত হয়ে আসছে।
তাঁর পরম সৌভাগ্য যে তিনি কয়েক জন অতীত বুদ্ধের সাক্ষাৎ লাভ করে ছিলেন এবং দান শীল ভাবনা রূপ অক্ষয় সুকৃতি সঞ্চয় করে ছিলেন। এ মহা কুশলই তাঁর তৃষ্ণা ক্ষয়ের পথ সুগম করে ছিল। জন্মান্তরের শক্তি শালী পুণ্য সংস্কার তাঁকে উদ্বুদ্ধ করল। কুশল কর্ম সম্পাদনে তিনি আত্ম নিয়োগ করলেন এবং প্রীতি ফুল্ল মনে পুণ্য সঞ্চয় করতেন। প্রতি তাঁর উৎসাহ সমধিক।
বিদ্যা বর্তা ও বুদ্ধি মত্তা তাঁকে মহীয়সী করে তুলে ছিল। তাঁর চিত্র বিরাগ প্রবল। অনিত্য দুঃখ অনাত্ম এ আধ্যাত্মিক বিষয় ক্রয় তিনি গভীর ভাবে চিন্তা করতেন। ত্রি লক্ষণ জ্ঞানই তাঁর চিত্তে ভাবান্তর এনে দিয়ে ছিল। তিনি যৌবনে পদার্পণ করলেও বিলাস ব্যসনের প্রতি ছিলেন উদাসীন। জাগতিক দুঃখ তাঁর মনে ভীতির সঞ্চার করে ছিল। দুঃখের উৎস তাঁর ক্ষয় সাধনের এক মাত্র উপায় বিরাগ, তা জ্ঞাত হয়ে সংসারের প্রতি বীত শ্রদ্ধ হলেন। উদ্বিগ্ন হলেন তিনি সংসার ত্যাগের জন্য। এক সময় ভিক্ষুণী মহা প্রজাপতি গৌতমীর সাথে বিরাগিণী শুভার সাক্ষাৎ হল। গৌতমীর উপদেশ তাঁর মর্মস্পর্শ করল। তিনি আকুল হয়ে পড়লেন বুদ্ধ শাসনে প্রব্রজ্যা লাভের জন্য।
মাতা পিতাঁর অনুমতি নিয়ে তিনি গৌতমীর নিকট প্রব্রজ্যা ধর্মে দীক্ষা নিলেন। অন্তর্দৃষ্টির অনুশীলনে তিনি কৃত কৃতার্থ হলেন। অচিরে অনাগামী ফল লাভ করলেন। কাম রাগ ও ক্রোধের নিরব শেষ নিরোধ হল। চিত্ত শান্ত হল, অনু পম প্রীতিরসে হৃদয় প্লাবিত হল। শুভার করণীয় এখনও শেষ হয়নি। মান, ভব রাগ ও অবিদ্যার মূলচ্ছেদ করতে হবে। নির্জন সাধনার প্রয়োজন। তজ্জন্য তিনি প্রয়াস ও যত্ন বতী হলেন।
নির্জন তাঁর অতি প্রিয়, নির্জনেই শান্তি, নির্জনেই তিনি অভি রমিত হন। এক সময় পুণ্য লক্ষণ বিমন্ডিত তথাগত বুদ্ধ রাজ গৃহে জীবকের ‘আম্রকানন বিহারে’ সশিষ্যে অবস্থান করে ছিলেন। ভিক্ষুণী শুভাও ছিলেন তথায় ভিক্ষুণীদের আবাসে। প্রায় সময় তিনি আম্র কুঞ্জের নির্জন প্রদেশে একাকিনী দিবা ভাগ অতি বাহিত করতেন; তথায় গভীর ধ্যানে নিবিষ্ট হতেন।
এক দিন শুভ মধ্যাহ্নে আম্র কাননের
নির্দিষ্ট নির্জন স্থানের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন। কিছু দূর যাওয়ার পর দেখলেন এক নির্জন স্থানে এক
তরুণ যুবক। তাঁর প্রতি লোলুপ দৃষ্টিতে চেয়ে
আছে। সে শুভার সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়েছে
এবং তীব্র লালসায় বিমূঢ় হয়ে পড়ছে। তাঁর
গমন পথ সে রুদ্ধ করে দাঁড়াল। শুভা বিমর্ষ
হয়ে গভীর স্বরে বললেন “পথ ছাড়ো।” মৃদু হাস্যে যুবক বলল “তা হবে না, পথ ছাড়তে পারবো
না।” শুভা ত্রি লক্ষণ ভাবনায় চিত্ত নিবিষ্ট রেখে উৎপাটিত চক্ষু স্থলের বেদনা সহ্য
করতে লাগলেন। তিনি ধীর পদবিক্ষেপে আম্র কানন বিহারে প্রত্যাবর্তন করলেন।
সর্বদর্শী বুদ্ধের নিকট তিনি উপনীত হয়ে বুদ্ধের এবং তাঁর দেহের মহা পুরুষ লক্ষণ সমুহ অগাধ শ্রদ্ধা ও প্রীতিনেত্রে দর্শন মাত্র তাঁর হৃত চক্ষু পুনঃ প্রাপ্ত হলেন। শুভা তখন বিস্ময়ানন্দ অভি ভূত হলেন। বুদ্ধ গত প্রীতিতে তাঁর সর্বশরীর স্ফুরিত হল। তিনি স্থিতাবস্থায় অপলক প্রীতি নেত্রে পুণ্য পুরুষ তথাগতের প্রতি দৃষ্টি নিবন্ধ রেখে দাঁড়িয়ে রইলেন এমতাবস্থায় দিব্য দর্শী বুদ্ধ তাঁর চিত্ত ভাব পরিজ্ঞত হয়ে তাঁর চিত্তানু রূপ ধর্ম দেশনা করলেন।
দেশনার মাধ্যমে শিক্ষা দিলেন সর্বোচ্চ জ্ঞান লাভের উপায়। বুদ্ধের উপদেশের সঙ্গে সঙ্গেই গভীর অভি নিবেশ সহ কারে অন্তদৃষ্টিতে প্রতিষ্ঠিত হলেন। সৌভাগ্যবতী শুভার মনো বাসনা পূর্ণ হল। অমৃত নিঝর নির্বাণ সাক্ষাৎ করে অনির্বচনীয় নৈর্বণিক সুখে সুখী হলেন তিনি। শুভা কাহিনী সমাপ্ত।